চোখ মেললেই আমরা যা দেখতে পাই সবি রঙের খেলা । রঙ ছাড়া এই পৃথিবীতে কিছুই নেই । আমরা যা দেখি সেটা হল দেখা আলো বা দৃশ্যমান আলো, এছাড়াও দৃশ্যমান আলোর না দেখা রূপ নিয়েও বিশাল সায়েন্স পড়ে রয়েছে । কোন রঙের আলো যখন চোখে এসে পরে তখন আমরা সে রঙের আলোটাকে দেখতে পাই । অর্থাৎ, আলোর আমাদের চোখে এসে পরে বলেই আমরা দেখতে পায় । যেমন, অন্ধকার হলে কোন আলো আমাদের চোখে এসে পড়ে না বিধায় আমরা কালো ছাড়া কিছুই দেখতে পারি না । আসলে অন্ধকারের কালোটা কোন রঙ না। সেটাকে একটা দশা(Phrase) বলা হয়। মানে কিছুই না থাকলে সেটা আমাদের চোখ কালো করে দেখতে পায় যা আমাদের ব্রেইনে কালো রঙ বলে ধরে নেয়। আসল কথা হল, অন্ধকারটা একটা ইল্যুশন বা বিভ্রান্তি। অন্যপ্রাণিরা অন্য রকম এই অন্ধকারটাকে দেখে। তাই, অন্ধকারটাকে কালো রঙ ভাবাটা নিত্যান্তই বোকামী।
আমাদের চোখতো অনেক কিছুই দেখতে পাই কিন্তু আমাদের মস্তিষ্ক সব কিছু ধরে রাখতে পারে না । আমাদের ব্রেইন চোখের মাধ্যমে তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnetic Radiation) গুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য (Wave Length) থেকে বিশেষ বর্ণালী (Spectrum) ধারণ করে রাখতে পারে । অর্থ্যাৎ আমরা চোখ দিয়ে যেসব রঙ দেখতে পারি সব কটি রঙের এক একটি তরঙ্গদৈর্ঘ্য আছে । আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৩০০ থেকে ৭০০ নেনোমিটার হলে সে আলোকে (Visible Lights) বলা হয় ।
আর এটাও আমরা জানি যে, একটি সাদা আলোতে সাতটি রঙ আছে । বাংলায় সহজে আমরা "বেনিআসহকলা" নামে মনে রাখি । যারা এই ট্যাকনিকটি জানেন না তাদের জন্য পূর্ণ নামগুলো লিখে দিচ্ছি,
- বে - বেগুনি
- নি - নীল
- আ - আসমানি
- স - সবুজ
- হ - হলুদ
- ক - কমলা
- লা - লাল
চিত্রঃ বিভিন্ন রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য (The Art of color) |
উপরের আলোচনা বুঝতে পারলে নিচের কয়েকটি জিনিস আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন ।
অবলোহিত রশ্মিঃ
- তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যত বেশি হবে আলোর তিব্রতাও তত বেশি হয় ।
- তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যত কম হবে আলোর তিব্রতাও তত কমে যাবে ।
অবলোহিত রশ্মিঃ
- যে সকল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৭৫০ উর্ধ্ব তাদেরকে 'ইনফ্রারেড রে' (Infrared Ray) বা বাংলায় অবলোহিত রশ্মি বলা হয় ।
- এই রশ্মি মানুষ খালি চোখে দেখতে পাই না । কারণ, এটি মানুষের ব্রেইনের দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে কম বলে ।
অতিবেগুনি রশ্মিঃ
- যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৩৫০ ন্যানোমিটার থেকে কম তাদেরকে বলা হয় "আলট্রা ভায়োলেট রে" (Ultra Violet Ray) বা বাংলায় 'অতিবেগুনি রশ্মি' ।
- এই রশ্মি মানুষ খালি চোখে দেখতে পাই না । কারণ, এটি মানুষের ব্রেইনের দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে কম বলে ।
এছাড়াও আরো কয়েকটি ব্যাঞ্জক রশ্মি রয়েছে যেগুলো মানুষ খালি চোখে দেখতে পারে না । যেমন,
- মাইক্রোওয়েভ
- রেডিও ওয়েভ
- এক্স রে
- গামা রে
এই সকল ওয়েভের আলো আমরা দেখতে পাই না । তবে আমরা সেগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করে থাকি । যা রশ্মির নাম শুনেই বুঝা যায় ।
স্ট্রিট সিগন্যালে কেন লাল আলো ব্যবহার করা হয়?
নিরাপদ রাস্তা পারাপারে ইন্ডিকেটর হিসেবে লাল আলো ব্যবহার করা হয় । ট্রেনের ইনডিকেটরগুলোও লাল আলোর হয় । প্রশ্ন হল কেন এতো রঙ থাকতে লাল আলো ব্যবহার করা হয় ? আপনি যদি উপরের লেখাটি বুঝে থাকেন তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে পানি ভাত । মানুষ যে সাতটি রঙ দেখতে পায় তার মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচাইতে বেশি । আর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি হওয়া মানেই আলোর তিব্রতা বেশি হওয়া । আর রাস্তার সিগন্যাল কিংবা ট্রেনের সিগন্যাল এমন হওয়া দরকার যেটা অনেক দূর থেকেও যাতে দেখা যায় । তাই , মানুষের দৃশ্যমান আলোর সবচাইতে বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের লাল আলোকে এ কাজে ব্যবহার করা হয় । যাতে অনেক দূর থেকে সিগন্যাল দেখা যায় ।
নিরাপদ রাস্তা পারাপারে ইন্ডিকেটর হিসেবে লাল আলো ব্যবহার করা হয় । ট্রেনের ইনডিকেটরগুলোও লাল আলোর হয় । প্রশ্ন হল কেন এতো রঙ থাকতে লাল আলো ব্যবহার করা হয় ? আপনি যদি উপরের লেখাটি বুঝে থাকেন তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে পানি ভাত । মানুষ যে সাতটি রঙ দেখতে পায় তার মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচাইতে বেশি । আর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি হওয়া মানেই আলোর তিব্রতা বেশি হওয়া । আর রাস্তার সিগন্যাল কিংবা ট্রেনের সিগন্যাল এমন হওয়া দরকার যেটা অনেক দূর থেকেও যাতে দেখা যায় । তাই , মানুষের দৃশ্যমান আলোর সবচাইতে বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের লাল আলোকে এ কাজে ব্যবহার করা হয় । যাতে অনেক দূর থেকে সিগন্যাল দেখা যায় ।
দারুন হয়েছে । অনেক উপকৃত হলাম ।
Reply-আমজাদ